মাল্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ নম্বর সদস্য সেঞ্জিন ভুক্ত একটি দেশ।ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত সাতটি দ্বীপ নিয়ে মাল্টা গঠিত।ইতালির সিসিলি শহর থেকে ৯৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।মাত্র ৩১৬ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট এ দ্বীপের জনসংখ্যা ছয় লাখ।
এদেশের মানুষের গড় আয় ৪৮ হাজার ডলারের বেশী।পর্যটনই দেশের আয়ের প্রধানতম উৎস।৯৫ শতাংশ জনগোষ্ঠী রোমান ক্যাথলিক ।ভ্যালেতা হচ্ছে মাল্টার রাজধানী।ভূমধ্যসাগরের মনোরম আবহাওয়া, পরিবেশ-প্রতিবেশের ভারসাম্য, পরিচ্ছন্ন শহর, অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো এবং আকাশ ও সমুদ্রপথে যোগাযোগব্যবস্থা বিদেশী পর্যটকদের কাছে টানে।বিভিন্ন দেশ থেকে বছরে ২৬ লাখ পর্যটক সাগরের ঊর্মিমালা ও নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে মাল্টা ভ্রমণ করে থাকে।
মাল্টা ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪০তম বছরে গত জুলাইয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মাল্টা সফর করেন। এটি ছিলো পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম সফর। এ সফর বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এ সফরকালে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কূটনৈতিক পর্যায়ে নিয়মিত আলোচনা বিষয়ে ও দুই দেশের কূটনৈতিক একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ে পৃথক দু’টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। সফরকালে বাংলাদেশ ও মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মাল্টা চেম্বার, ট্রেড মাল্টা ও এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশ-মাল্টা বিজনেস ফোরামে যোগ দেন। এ ফোরামে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আশাব্যঞ্জক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। মাল্টার শীর্ষ ব্যবসায়ীরা এ ফোরামে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের প্রতি তাদের গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। মাল্টার শক্তিশালী পর্যটন খাত ও দেশব্যাপী চলমান অবকাঠামো নির্মাণ খাত বাংলাদেশী দক্ষ, অদক্ষ পেশাজীবীদের জন্য কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। প্রায় ৫০০ বছরের প্রাচীন মাল্টার রাজধানী ভ্যালেতার মেরামত ও সৌন্দর্যবর্ধন এবং ক্রমবর্ধমান পর্যটন খাতের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে চলমান নির্মাণশিল্পে বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে।
বর্তমানে মাল্টায় কয়েক শত বাংলাদেশী কাজ করছেন।ইউরোপের ছোট্ট দেশ মাল্টা প্রজাতন্ত্রে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাংলাদেশী ছাত্রদের জন্য এখানে পড়াশোনার সুযোগ অবারিত। ব্যয়ভার তুলনামূলক কম। মাল্টায় বিশ্ববিদ্যালয় আছে পাঁচটি। এর মধ্যে মাল্টা ইউনিভার্সিটি ইউরোপের অন্যতম একটি প্রাচীন ইউনিভার্সিটি। বাংলাদেশ থেকে কিছু শিক্ষার্থী বর্তমানে মাল্টা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন করছেন।এখানের পড়াশোনার মান অনেক উন্নত এবং পরিবেশ শিক্ষাবান্ধব। দ্বীপরাষ্ট্র হওয়ায় এখানে আইনশৃঙ্খলা কঠোরভাবে পালন করা হয়ে থাকে।
Leave a Reply